১.
পারভেজ সাজ্জাদ ওরফে মোথা ভাই। মোথা ভাই নামের পিছনের হিস্টোরি হইল, আমাগো সাজ্জাদ ভাই নতুন সিগারেট খাওয়া শিখছে। তো শিহান তারে উপদেশ দিছে যে, যতদিন তুই নিজের টাকা দিয়া না কিনতেছস, তত দিন তুই অন্যের সিগারেট এর মোথা খাবি। সেই থেকে বাকি জুনিয়রগুলা তার নাম দিছে মোথা ভাই। এখন ঘটনা হইলো, এই নামে ডাকলে আমাগো মোথা ভাই হেভি চেইতা যায়। কিন্তু কোন লাভ হয় না। পুলাপাইন কম্পুটারের ডেস্কটপ এ মোথা ভাই লিখা দিয়া যায়। সিগারেট খাইয়া বাইরে থেকে নিভানো মোথা নিয়া আসে উনার জন্য। যাই হোক, একদিন মনে হয়, আমাগো মোথা ভাই এর মাথা একটু বিগড়াইয়া ছিল, সে শ্যামলরে (এক জুনিয়র) ধইরা দিল মাইর। কইল, নেক্সট টাইম ডাকলে খবর আছে।
মাইর খাইয়া শ্যামল এর মাথাই নষ্ট। তার মনে ব্যাপক কষ্ট। কষ্টের কারন আবার মাইর খাওয়া না। মোথা ভাই নামে ডাকতে না পারার যন্ত্রণা। কিছুক্ষণ পরে সে আইসা দেখি মিটি মিটি হাসতেছে। আমি জিগাইলাম কি হইছে? শ্যামল আমারে কয়, সাজ্জাদ ভাই এর নতুন নাম দিছি, পারু ভাই। আমি বললাম, পারু কেন? সে বলে, পারভেজ এর সংক্ষেপ পারু। সাজ্জাদ ও ততক্ষণে খেইপা গেছে।
পারভেজ সাজ্জাদ আমার বন্ধু মানুষ। ওরে একটা মাইয়ার নাম এ ডাকবো শুইনা আমার খারাপ লাগলো। মনে ব্যাপক কষ্ট পাইলাম। আমি কইলাম, না কাজটা একেবারে ঠিক হয় নাই। শ্যামলরে বললাম, ওরে মেয়েদের নামে ডাকতেছিস কেন? সংক্ষেপ করার ইচ্ছা হইলে নিয়ম মাইনা করতে হইবো। পারভেজ থেকে পা আর সাজ্জাদ থেকে সা নিয়া পাসা (পাছা) ভাই ডাকতে পারস।
বইলা আমি নাই। কে যায় গায়ে পইরা মাইর খাইতে। পরে শুনলাম, সাজ্জাদ তার মোথা নাম একসেপ্ট করছে। এখন তারে আমরা মোথা ভাই নামেই ডাকি।
২.
আমার আরেক বন্ধু আছে গান্জু। গান্জা খাইছে এর কোন প্রমান আমি এখনও জানি না, কিন্তুক সবাই ওরে কলেজ থেইকা নামি এই নামে ডাকে, তাই আমিও ডাকি। ওর লগে ভার্সিটির প্রথমদিকে আমার হেভ্ভি খাতির ছিল।
একদিনের ঘটনা। আমি আর গান্জা গেছি সাইবার ক্যাফেতে। গিয়া আমি মেইল চেক করতেছি। দেখি আমার খালু মেইল করছে। মেইলের ভাষা একটু বন্ধু বন্ধু টাইপ। আসলে আমার খালুর সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভালো। যাইহোক আমিও একটা রিপ্লাই দিলাম।
সাইবার ক্যাফে থেকে বাইর হইয়া আমরা রিক্সা নিয়া ভার্সিটিতে যাবো। রিক্সাতে উঠে গান্জু আমারে জিগায়, তোর খালুর সাথে তোর তো খুব ভালো সম্পর্ক। আমি বললাম, হ। তার বয়স কত? এইতো ধর ৩৫-৩৬ হইবো। তারপরের কোশ্চেন শুইনা তো আমি হা। শালায় কয়কি?
আমারে জিগায়, তোর খালু কি বিয়া করছে?
৩.
ভার্সিটিতে যখন আমি ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি, তখনকার ঘটনা। আমাদের এক বন্ধু ছিল, নাম মুকুল। তো সেই পোলা খুব আতেল টাইপের। পরীক্ষা-পড়াশোনা নিয়া তার ব্যাপক টেনশন। তো ১ম সেমিস্টারের ১ম ভাইভা পরীক্ষা চলতেছে। আমার ভাইভা শেষ, কিছুক্ষণ পর মুকুলের ভাইভা শুরু হবে। বোর্ড থেকে বের হইয়া দেখি, সে ব্যাপক টেনশনের সাথে সবাইরে এইটা সেইটা জিগাইতেছে।
আমারে দেইখা সে আলাদা ডাইকা নিয়া জিগাইলো কি কি কোশ্চেন ছিল। আমি কইলাম। তারপর সে আমারে জিগায়, সে যে ড্রেস পরে আছে তাতে কোন সমস্যা আছে কিনা? আমি দেখলাম, প্যান্ট শার্ট ইন করে জুতা পইরা আছে। জুতা আবার চকচক করতেছে। আমার কাছে সব ঠিকই মনে হইলো।
কিন্তু হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি উকি দিল। আমি ওরে বললাম, তুই যে ইন করছস, সেইটা হাফ না ফুল? সে কয় বুঝাইয়া বল? আমি বললাম, হাফ ইন মানে হইল আন্ডারওয়ার সার্টের নিচে, আর ফুল ইন মানে সার্ট আন্ডারওয়ার এর নিচে যাবে। ভার্সিটির ডেকোরাম অনুযায়ী, ভাইভা বোর্ড এ ফুল ইন করে যাইতে হইবো। মুকুলের তো মাথায় হাত। সে কয়, তার ইন হইল হাফ। আমি কাচুমাচু মুখে বললাম, তাইলে কেমনে কি? সে আমারে তার হাতের বইপত্র দিয়া কইতেছে, দোস্ত তুই একটু দাড়া, আমি বাথরুম থেকে আসতেছি।
বাথরুম থেকে আসার পর ওরে দেইখা আমার যে হাসি পাইছে তা বলার মত না। সে ফুল ইন কইরা আসছে। আর ফুল ইন যাতে বোঝা যায়, সেই জন্য আন্ডারওয়ারটা একটু বাইর কইরা রাখছে ।
শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০১০
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন